একজন শিক্ষকের গল্প- মহাভারত
একজন প্রফেসর ক্লাসে প্রবেশ করে হাতে থাকা গ্লাসটি দেখিয়ে ছাত্রদের জিজ্ঞেস করলেন আমার হাতে থাকা পরিপুর্ন এই গ্লাসের ওজন কত হবে? ছাত্র-ছাত্রীরা অনেকেই বললেন যে ৫০ বা তার বেশি হবে! আবার অনেকেই বললো ১০০ থেকে ১৫০ গ্রাম হতে পারে। প্রফেসর তখন উত্তরে বললেন আমি গ্লাসের ওজন জানিনা কেননা আমি এখনো পরিমাপ করিনি। তবে আমার প্রশ্ন হলো আমি যদি এই গ্লাস এভাবে কিছুক্ষন ধরে রাখি তাহলে কি হবে কেউ কি জানো তোমরা?
ছাত্র-ছাত্রীরা অনেকেই কিছুখন ভেবে বললো তেমন কিছুই হবে না। তবে স্যার এ থেকে আমরা ধর্ম ক্লাসে কি শিক্ষাপাবো স্যার এটাতো সাইন্সের ক্লাসে পদার্থ বিষয়ে প্রশ্ন স্যার! ছাত্র-ছাত্রীরা অনেক কৌতুহল নিয়ে স্যার কে প্রশ্ন করলেন।
স্যার তখন বললেন আমি যদি এই জলের গ্লাসটি কয়েক ঘন্টা হাতে এই ভাবে ধরে রাখি তাহলে আমার হাতে বেথা শুরু হয়ে যাবে, এবং আমি কষ্ট অনুভব করতে শুরু করবো। আমি ঠিক ভাবে ধরে থাকতে পারবো না। হয়তো একসময় হাত থেকে পরে যাবে গ্লাসটি। তাহলে আমার এখন কি করা উচিৎ কেউ কি বলতে পারবে।
তখন এক ছাত্র দাঁড়িয়ে বললো স্যার তাহলে আপনাকে জলের গ্লাসটি হাত থেকে নামিয়ে রাখতে হবে তাহলে আপনার কষ্ট বা বেথা কমে যাবে। স্যার ছাত্রের এই কথা শুনে খুশি হয়ে বললেন তুমি ঠিক কথা বলেছো আমাকে গ্লাসটি নামিয়ে রাখতে হবে। কিন্তু আমি যে গ্লাস টী নিয়ে এলাম হাতে রাখলাম কষ্টের কথা বললাম এই থেকে তোমরা কি শিক্ষা পেলে কেউ কি বলতে পারো।
সবাই নিরব হয়ে বসে রয়েছে কেউ কিছু বলতে পারছেনা, সবাই ভাবছে স্যার এই গ্লাস হাতে রেখে কি বুঝাতে চেয়েছেন।
শিক্ষক তখন সবাই কে নিরব হয়ে থাকতে দেখে বললেন, এটি আসলে আমাদের জীবনের সাথে মিলে যাওয়া কিছু ঘটনার মতো। তোমরা অনেকেই জানো যে তোমার মা বাবা কত কষ্ট করে টাকা জমিয়ে তোমাকে পড়ালেখা শেখাচ্ছে যাতে তুমি ভালোভাবে পড়াশুনা করে মানুষের মত মানুষ হও আর মা বাবার সহায় হও। কিন্তু তোমাদের মধ্যে অনেকেই আছে কারনে অকারনে মা বাবা এমন কি গুরুজন কে কষ্ট দাও।
তুমি যে কষ্ট দিচ্ছো এখানে তোমাকে বলতে আমি গ্লাস কে বুঝালাম। আর তোমার গুরুজন বা মা বাবা বলতে এখানে আমি আমার হাতের কথা বললাম। আমার হাত হচ্ছে তোমার গুরুজন আর গ্লাস হচ্ছে তোমরা। তোমরা জানো না মা বাবাকে প্রতিদিনিই কত কষ্ট দিচ্ছো, সবার কথা বলছিনা। তবে যারা কষ্ট দাও তারা এখান থেকে শিক্ষা নিতে পারো।
কেননা আমি কষ্ট সহ্য করে গ্লাসটি হাতে নিয়ে ছিলাম কিন্তু আমি তো সারাজীবন হাতে নিয়ে থাকতে পারবো না, কষ্ট হবে বেথা হবে বা একসময় হাত থেকে গ্লাসটি রেখে দিবো। ঠিক তেমনী তোমার দেওয়া কষ্ট যত বাড়বে তোমার মা বাবা তোমার থেকে ততোটাই দূরে সরে যাবে। তাই মা বাবাকে প্রনাম করো গুরুজন কে প্রানাম করো। তাহলে তুমি সুস্থ সুন্দর জীবন যাপন করতে পারবে আর তোমার অনেক সুনাম বয়বে।
জীবনের সমস্যাগুলো নিয়ে চিন্তা করা প্রয়োজন রয়েছে। তবে প্রয়োজনের বেশি যতসব চিন্তা হয় বা প্রতিদিন যত সমস্যা হয় আর তা যদি মনে রেখে ঘুমাও তাহলে ঘুমাতে পারবেন না। তাই চিন্তা ও প্রতিদিনের সমস্যা গুলো ঝেড়ে ফেলে দিন, তাহলে পরের দিন নতুন করে নিজেকে ভাবার সময় পাবেন
আমাদের জীবনে যতোই সমস্যা বা চিন্তা আসুক না কেন আত্মবিশ্বাসের সাথে প্রতিটি সমস্যাকে মোকাবেলা করলে দেখবে তোমাদের সামনে যত চালেঞ্জ-ই আসুক না কেন জয় হবেই।