জনমেজয়ের শাপ - আরুণি, উপমন্যু ও বেদ। পৌষ্যপর্বাধ্যায়। মহাভারত।
সৌতি বললেন।- পরীক্ষিৎ পুত্র জনমেজয় তার তিনজন ভ্রাতার সংগে কুরুক্ষেত্রে এক যজ্ঞ করছিলেন এওমন সময় সেখানে একটি কুকুর এলো। জনমেজয়ের ভ্রাতারা কুকুর টিকে প্রহর করলেন, সে কাদতে কাদতে তার মাতার কাছে গেল এবং কুক্করী ক্রদ্ধ যজ্ঞস্থলে এসে বললে, আমার পুত্রকে বিনা দোষে মারলে কেন? জনমেজয় প্রভৃতি কোন উত্তর দিলেন না। কুক্করী তখন বললো এ কোন ও অপরাধ করেনি তথাপি প্রহত হয়েছে, তোমার উপরেও আতর্কিত বিপদ এসে পড়বে।
দেবশুনী সরমার এই অভিশাপ শুনে জনমেজয় অত্যান্ত চিন্তাকুল হলেন। যজ্ঞশেস হলে তিনি হস্তিনাপুরে ফিরে এসে শাপমোচন করার জন্য উপযুক্ত পুরোহিতের সন্ধান করতে লাগলেন। একদিন তিনি মৃগয়া করতে গিয়ে শ্রুতশ্রবা ঋষির আশ্রমে উপস্থিত হলেন এবং নমস্কার করে বললেন, ভগবান, আপনার পুত্র সোমশ্রবা কে দিন, তিনি আমার পুরোহিত হবেন। শ্রুতশ্রবা বললেন, আমার এই পুত্র সর্পীর গর্ভজাত, এ মহাতপসবী ও বেদজ্ঞ মহাদেবের শাপ ভিন্ন অন্য সমস্ত শাপ নিবারণ করতে পারে। কিন্তু এর একটি গূঢ় ব্রত আছে, কোনও ব্রহ্মাণ কিছু প্রার্থনা করলে এ তা অবস্যই পূরণ করবে। যদি তুমি তাতে সম্মত হও তবে একে নিয়ে যাও। জনমেজয় ঋষিপুত্রকে নিয়ে গিয়ে ভ্রাতাদের বললেন, আমি একে উপাদ্ধায়রুপে বরণ করেছি, ইনি যা বলবেন তোমরা তা নির্বিচারে করবে। এই আদেশ দিয়ে জনমেজয় তক্ষশিলা প্রদেশ জয় করতে গেলেন।
উপমন্যু, অরুনি ও বেদ। এই তিন শিষ্যদের পরিক্ষা। মহাভারত
আয়োদ ধৌম্যর শিষ্য অরণির পরিক্ষা
এই সময়ে আয়োদ ধৌম্য, নামে এক ঋষি ছিলেন, তার তিন শিষ্য উপমন্যু, অরুনি ও বেদ। তিনি তার পাঞ্চালদেশীয় শিষ্য আরুণিকে আজ্ঞা দিলেন। যাও, তুমি আমার ক্ষেতরে আল বাঁধ। আরুণি গুরুর আজ্ঞা পালন করতে গেলেন। কিন্তু আল বেধে না ফেরাতে ঋষি ধৌম্য তার বাকি দুই শিষ্যকে নিয়ে ক্ষেতরে। যখন ক্ষেতরে কাউকে দেখতে পেলেন না তখন ডাক দিলেন ঋষি ধৌম্য কোথায় তুমি বালক। তখন আরুণি জমির আইল থেকে উঠে এলেন। এবং বললেন গুরু আমি জলপ্রবাহ রোধ করতে না পেরে সেখানে শুয়ে ছিলাম, এখন আপনি ডাকতে উঠে এসেছি। আজ্ঞা করুন কি করতে হবে। ধৌম্য বললেন, তুমি কেদারখন্ড(জমির আল) বিদারণ করে উঠেছে সেজন্য তোমার নাম উদালক হবে। আমার আজ্ঞা পালন করেছ সেই জন্য তুমি শ্রেয়োলাভ করবে এবং মেস্ত বেদ ও ধর্মশাস্ত্র তোমার অন্তরে প্রকাশিত থাকবে।
শৌনকের আশ্রমে সৌতি। আদিপর্ব/মহাভারত